ফেসবুক অ্যালগরিদম এবং মেয়েদের মন, এদের বুঝতে পারা অনেক কঠিন। মেয়েদের কথা যখন বললাম, একটু ছেলেদের কথাও বলি। ফেসবুক অ্যালগরিদম এবং হাসবেন্ড এর মধ্যে কি মিল জানেন? যেকোনো কিছুর দোষ এদের উপর অনায়াসে চাপিয়ে দেয়া যায়। তবে হ্যা, কেউ ধোয়া তুলসি পাতা না। এক হাতে তালি বাজে না। আপনাদের মনোযোগ যেহেতু পেয়েছি, এখন কাজের কথা বলি। যারা ফেসবুকে নিজেরা অ্যাড দিচ্ছেন অথবা কোন সার্ভিস প্রভাইডারের কাছ থেকে সার্ভিস নিচ্ছেন, এই লেখা তাদের জন্য। আগেও বলেছি, আবারও বলব, আমার লেখা ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রাম ভিত্তিক ছোট এবং মাঝারি ব্যবসায়ের জন্য বেশী প্রযোজ্য।
আমরা আজকে কিভাবে ভাল অডিয়েন্স তৈরি করতে হয় সেটা বলব না, এর থেকেও গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় আছে সেটা হচ্ছে আপনার অ্যাড এর স্ট্র্যাটেজি। অর্থাৎ প্র্যাক্টিকালি অ্যাড শুরু করার আগে আপনি আগে অ্যাড এর স্ট্র্যাটেজি তৈরি করবেন। আপনার স্ট্র্যাটেজি যত বুলেট প্রুফ হবে, আপনার অ্যাড থেকে ভাল ফলাফল আসার সম্ভাবনা ততো বেশী হবে।
আপনার অ্যাড স্ট্র্যাটেজি তে কি কি থাকতে পারেঃ
১। আপনার টার্গেট – কোন প্রোডাক্ট বিক্রয় করতে চান, কি পরিমাণ বিক্রয় করতে চান, কবের মধ্যে স্টক শেষ করতে চান ইত্যাদি।
২। কাদেরকে অ্যাড দেখাবেন – কাস্টমার সেগমেন্ট বা পারসোনা
৩। কি ধরণের অ্যাড দেখাবেন – বিভিন্ন ধরনের অ্যড অব্জেক্টিভ থেকে কোন ধরণের অ্যাড চালাবেন সেটা
৪। অ্যাড এর পেছনে টোটাল কত বাজেট রাখবেন
৫। অ্যাড এ কি দেখাবেন – ছবি, ভিডিও, ক্যারাওসেল ইত্যাদি
অ্যাড শুরু করার আগে এই বিষয়গুলো একদম ক্লিয়ারলি ঠিক করে নিবেন। একটা কথা আছে, “Failing to Plan is Planning to Fail” অর্থাৎ পরিকল্পনা করতে ব্যর্থ হওয়া, ব্যর্থতার পরিকল্পনা করার মতই। তাই অ্যাড শুরু করার আগে আপনার এই পরিকল্পনা তৈরি করুন। আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে এখন ৪টি বিষয় আলোচনা করব যা আপানাদেরকে ফেসবুক অ্যাড থেকে ভাল ফলাফল আনতে সাহায্য করবে ইন শা আল্লাহ্।
১। একসাথে অনেকগুলো অ্যাড চালানঃ আমরা দেখেছি, কোন পেইজে একসাথে অনেকগুলো অ্যাড রানিং থাকলে অভারল একটি ভাল রেসপন্স আসে। একাধিক ম্যাসেজ ক্যাম্পেইন, সাথে লাইক ক্যাম্পেইন এবং এঙ্গেজমেন্ট ক্যাম্পেইন ইত্যাদির একটা ব্লেণ্ড করে অ্যাড রান করলে পেইজের রিচ, এঙ্গেজমেন্ট এবং অভারল রেসপন্স অনেক ভাল আসে। তাই চেষ্টা করবেন আপনার বাজেটকে বিভিন্ন ধরণের অ্যাডের পেছনে একসাথে খরচ করতে। প্রডাক্টভেদে কোন ধরনের অ্যাড দেখাবেন সেটা ভিন্ন হতে পারে, তবে একটা অ্যাড এর থেকে একাধিক অ্যাড চালালে ফলাফল ভাল আসে। টার্গেটিং এর ক্ষেত্রে আপনি চাইলে ভিন্ন ভিন্ন কন্টেন্ট এক টারগেট অডিয়েন্সকে দেখাতে পারেন, বা একটু মডিফাই করে নিতে পারেন।
২। লম্বা সময় ধরে অ্যাড রান করবেনঃ ফেসবুক অ্যাড এর লার্নিং ফেইজ নামে একটি বিষয় আছে। এই সময়টায় অ্যাডটা পারফর্মেন্স এর উপর ভিত্তি করে শিখতে থাকে কোন ধরণের অডিয়েন্স এর কাছে অ্যাড দেখালে ফলাফল ভাল আসবে। অ্যাড যত লম্বা সময় ধরে চলবে, ফেসবুক আরটিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ততো ভাল অডিয়েন্সের ধরণটা বুঝতে পারবে। নুন্যতম ৫-৭ দিন ধরে অ্যাড না চললে ভাল ফলাফল আশা করা ঠিক হবে না। তাই টি-২০ না খেলে, টেস্ট খেলুন।
৩। যত দোষ নন্দ ঘোষঃ অ্যাড ভাল পারফর্ম না করলেই ফেসবুককে দোষ দেয়া যাবে না। টার্গেট ভাল হলেও অ্যাড এর ক্রিয়েটিভ অর্থাৎ ছবি/ভিডিও এবং লেখা মান সম্মত না হলে অ্যাড থেকে ভাল রেজাল্ট আসবে না। ওয়েবসাইট এর ইউজার এক্সপেরিয়েন্স দাত ভাঙা হলে পকেটে টাকা আসবে না। তাই অ্যাড থেকে ভাল ফলাফল পেতে হলে সবগুলো বিষয়ের দিকেই সমান মনোযোগ দিতে হবে।
৪। ফলো ওয়াট ওয়ার্কসঃ কোন ধরণের টার্গেট অডিয়েন্স বা একটি নির্দিষ্ট পোস্ট থেকে যদি ভাল ফলাফল পান, তাহলে বেশী না বুঝে সেটা বার বার ফলো করুন। সেইম স্টাইল এবং সেইম ফরম্যাট ব্যবহার করুন। যতদিন পর্যন্ত ভাল পারফর্মেন্স পাবেন, চুপ চাপ সেটা ফলো করে যান। পারফর্মেন্স ক্রমাগত খারাপ হতে থাকলে এরপর আবার বিষয়টা রিথিঙ্ক করতে পারেন।
আপনার ফেসবুক পেইজে নেক্সট অ্যাড দেয়ার আগে উপরের বিষয়গুলো ভাবুন এবং এর আলোকে প্ল্যান করে আগানোর চেষ্টা করুন। আশা করি ভাল ফলাফল পাবেন।
Add a Comment