content marketing, Continto

সঠিক উপায়ে কন্টেন্ট মার্কেটিং এর উপকারিতা

পেইজের রিচ কম, আগের মত ম্যাসেজ নেই, ম্যাসেজ আছে তো সেল নেই, পেইজের কাস্টমারদের এঙ্গেজমেন্ট কম, ডিস্কাউন্ট প্রাইস দেয়ার পরেও কাস্টমার প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী না, এরকম সমস্যা আমাদের অনেকেরই। এর অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে সঠিকভাবে কন্টেন্ট মার্কেটিং করতে না পারা।

সহজ করে বুঝিয়ে দেই কন্টেন্ট মার্কেটিং বলতে কি বোঝাতে চাচ্ছি। কন্টেন্ট হচ্ছে আপনার ব্যবসায়ের পণ্য বা সেবা নিয়ে তৈরি ছবি, ভিডিও বা পোস্ট যার মাধ্যমে আপনি আপনার ক্রেতার সাথে যোগাযোগ করবেন।

আমাদের দেশে বেশীরভাগ ফেসবুক ভিত্তিক পেইজের কন্টেন্ট যদি দেখেন, দেখবেন শুধু কাস্টমারকে কেনার জন্য বলা হয়, খুব কম পেইজ আছে যারা এমন কন্টেন্ট দেয় যেটা কাস্টমারদের উপকারে আসবে, যেটা তারা মনে রাখবে বা পরে ব্যবহারের জন্য সেইভ করবে।

এবং যখন আমরা শুধু সেল পোস্ট দিতে থাকব পেইজ থেকে তখন পেইজের রিচ কমে যাওয়া, এঙ্গেজমেন্ট কমে যাওয়া, ম্যাসেজ থেকে সেল না আসা, বেশি দাম দিয়ে প্রোডাক্ট কেনার প্রতি অনীহা থাকবেই। এবং সবচেয়ে জরুরী বিষয়, আপনার প্রতিযোগী আর আপনার মাঝে কোন তফাৎ থাকবে না।

আসেন সংক্ষেপে জেনে নেই, সঠিক উপায়ে কন্টেন্ট মার্কেটিং এর উপকারিতা।

বেশি রিচ এবং এঙ্গেজমেন্ট

ফেসবুক অ্যালগরিদমের একটা নিয়ম হচ্ছে কোন পোস্টে একবার আপনি রিয়াক্ট করলে বা কমেন্ট করলে সেই ব্যক্তি বা পেইজের পোস্ট আপনার সামনে পুনরায় আসবে। আপনার পেইজে যদি শুধু প্রোডাক্ট এর ছবি দিয়ে ভরায় রাখেন, রিয়াক্ট এবং কমেন্ট কম আসবে, বরং আপনি যদি কোন তথ্যবহুল, বা ইমোশনাল বা ফানি কন্টেন্ট দেন সেক্ষেত্রে রিয়াক্ট এবং কমেন্ট সাভাবিকভাবে বেশি আসবে, এবং এরপর যখন আপনি আবার পোস্ট করবেন অটোম্যাটিক সেই পোস্ট এর রিচ বেশি হবে। সুতরাং আপনার কন্টেন্ট এমন হতে হবে যাতে কাস্টমার রিয়াক্ট এবং কমেন্ট এর পরিমাণ বাড়ে। গতানুগতিক ধারা থেকে বের হয়ে আসুন।

অর্গানিক সেল

যে সেল করার পেছনে অ্যাড রান বা বুস্ট করে অর্থ বিনিয়োগ করতে হয় না, সেরকম সেলকে অর্গানিক সেল বলা হয়। আপনার কন্টেন্ট এর কোয়ালিটি, ভ্যারিয়েশন এবং ফ্রিকুয়েন্সি এগুলো যত বেটার হবে আপনার অরগানিক সেল আসার সম্ভাবনা বেশি। আপনি যদি আর সবার মত করেই শুধু সেল পোস্টে ফোকাস থাকেন, কন্টেন্ট এর প্রেজেন্টেশন ভাল না করেন, তাহলে আপনার সেল বাড়বে কিভাবে? সঠিক উপায়ে পরিকল্পিত উপায়ে কন্টেন্ট তৈরি করে প্রচার করতে পারলে আপনার সেল বাড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

ফানেল মার্কেটিং

সহজ ভাষায় ফানেল মার্কেটিং হচ্ছে কন্টেন্ট এবং অ্যাড এর সাহায্যে আপনার কাস্টমার এর সাথে কমিউনিকেট করা যাতে সে আপনার প্রডাক্ট সম্পর্কে জানা থেকে শুরু করে শেষ অব্দি ক্রয় করতে পারে। টেকনিক্যাল টার্মে এটাকে বলা হয় কাস্টমার জার্নি। অর্থাৎ আপনার কাস্টমার জার্নি এর প্রতিটি ধাপে আপনার কাস্টমারের সাথে যোগাযোগের জন্য কন্টেন্ট তৈরি এবং প্রচার করাকে ফানেল মার্কেটিং বলে। এখন আপনার যদি সেই পরিমাণ কন্টেন্ট না থাকে তাহলে আপনি ফানেল তৈরি করবেন কিভাবে? শুধু অ্যাড দিয়েও ফানেল তৈরি করা সম্ভব তবে প্রপার কন্টেন্ট না থাকলে আপনার ফানেল পরিপূর্ণভাবে সেল আনতে পারবে না।

ব্র্যান্ডিং

অনলাইন বিজনেসে এখন প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। এরকম প্রতিযোগিতার মাঝে টিকে থাকতে হলে আপনার প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিং জরুরী ভূমিকা পালন করবে। সঠিক ধরণের কন্টেন্ট না থাকলে আপনি ব্র্যান্ডিং এ পিছিয়ে যাবেন। শুধু কন্টেন্ট এর ধরণ নয়, কন্টেন্ট এর কোয়ালিটি এর উপর নির্ভর করবে আপনার কাস্টমার আপনার প্রতিষ্ঠানকে একটি আলাদা ব্র্যান্ড হিসেবে চিনবে কিনা। আপনার লোগো, কভারফটো, ওয়েবসাইট এর ল্যান্ডিং পেইজ, ফেসবুক পেইজের কন্টেন্ট, ইন্সটাগ্রাম এর প্রেজেন্টেশন সবকিছুর কন্টেন্ট আপনার ব্র্যান্ডিং বাড়াতে পারে এবং কমাতেও পারে।

লং টার্ম গেইনার

আপনি যদি সঠিক উপায়ে কন্টেন্ট মার্কেটিং করেন, আপনি লং টার্মে গেইনার হবেন। আপনার ব্র্যান্ডিং, কাস্টমার এর এঙ্গেজমেন্ট, আপনার সেলস ভলিউমে এটার পজিটিভ প্রভাব পড়বেই। বিজনেস এ শর্ট টার্ম গেইন যেমন থাকে, লং টার্ম গেইন ও থাকে। প্রপার কন্টেন্ট মার্কেটিং যে সকল বিজনেস করতে পারে, তাদের বিফলতার থেকে সফলতার হার বেশি।

আপনার ব্যবসায়ের কন্টেন্ট মার্কেটিং করার জন্য সঠিকভাবে শিখে, বুঝে, বিষয়গুলো প্রয়োগ করুন। তাহলে আপনার ব্যবসায়ের সফলতা আসবে ইন শা আল্লাহ্‌

পুরো লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

নাফিস কাওসার – ফাউণ্ডার – Continto

 

New online business, Continto, Nafees Kausar

নতুন অনলাইন বিজনেসে যে চারটি ভুল বেশি হয়

অনলাইন বিজনেস তো শুরু অনেকেই করে কিন্তু শেষে টিকে থাকে কয়জন? আমাদের চোখের সামনেই কত অনলাইন বিজনেস আসল এবং গেল। কিছু বিজনেস অনেকদিন চলার পর হাওয়া, কিছু ঠিকমত শুরু হওয়ার আগেই পগার পার। এগুলো কেন হয়? এদিকে একদল বলছে অনলাইন ব্যবসায় থেকে লাখ লাখ টাকার সেল এবং একই সময়ে অন্যরা গুটিয়ে নিচ্ছে বিজনেস, আসলে কোনটা বাস্তব? এবং যারা ব্যবসায় গুটিয়ে নিচ্ছে, তার কারণ বা কি? আজকে আমরা লিখব নতুন অনলাইন ব্যবসায় নিয়ে, কারণ অনলাইজন ব্যবসায় এর ক্ষেত্রে প্রথম ৩-৬ মাস অনেক বেশি জরুরী এর মধ্যে যদি একটি ধারাবাহিক ফলাফল না আসে তাহলে অনলাইন ব্যবসায় ধরে রাখে অনেক কঠিন। আজকে জানব নতুন অনলাইন বিজনেস খোলার পর যে চারটি ভুল সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।

পেইজ খুলে রেখে দেয়াঃ

অনেকেই আছে হুজুগের বসে হুট করে একটা পেইজ খুলে রেখে দেয়, ভাবে প্রোডাক্ট এনে নেই তারপর শুরু করব, বা ঈদের সময়ে শুরু করব ইত্যাদি। একটা ফেসবুক পেইজ খোলার পর যদি মাস খানেক এমনি রেখে দেয়া হয় এটা কখনই পেইজের হেলথ এর জন্য ভাল না। সুতরাং, আপনার প্রোডাক্ট, পোস্ট, টাকা সব কিছু রেডি না হওয়া পর্যন্ত পেইজ খোলার দরকার নেই। পেইজ খুলে সেই পেইজ যদি ইন্যাকটিভ রাখেন এর থেলে পেইজ না থাকা ভাল। সুতরাং একটা পেইজ খুলে রেখে দিবেন না, বরং যখন আপনি পুরদমে ব্যবসায় করতে প্রস্তুত হবেন তখন পেইজ খুলবেন এবং একটিভ থাকবেন, এর আগে না। নতুন পেইজ খুলে রেগুলার পোস্ট দেয়া, অ্যাড রান করা, লাইভ করা ইত্যাদি সব কিছু শুরু করতে হবে। পেইজ খুলে রেখে দিলে হবে না, পেইজ রানিং রাখতে হবে।

পরিকল্পনার অভাবঃ

একটা কথা আছে, কঠিন প্রশিক্ষণ, সহজ যুদ্ধ। অর্থাৎ, একটা কাজের পেছনে আপনি যত সময় এবং শ্রম দিবেন সেই কাজে সফল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। অনেক অনলাইন বিজনেস থাকে সঠিক পরিকল্পনা ছাড়াই শুরু হয়।

এই পরিকল্পনা যে কোন ধরণের পরকিল্পনাই হতে পারে। ফিনান্সিয়াল প্ল্যানিং, মার্কেটিং প্ল্যানিং, সেলস প্ল্যানিং কিছু ছাড়াই শুরু হয়ে যায় অনলাইন বিজনেস। এভাবে করে হয়ত আজকে থেকে ৭-৮ বছর আগে অনলাইন ব্যবসায় করা সম্ভব হয়েছে কিন্তু বর্তমানে এই প্রতিযোগিতামুলক মার্কেটে কখনই “যা হবে দেখা যাবে”, “অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা” এরকম মাইন্ডসেট নিয়ে ব্যবসায় করা যাবে না।

পুরো ব্যবসায়ের পরিকল্পনা সমেত ব্যবসায় নামলে আপনার সফলতা আসার সম্ভবনা বেশি। তাই প্রস্তুতি নিন, শিখুন, জানুন, প্রয়োগ করুন, এবং যেখানে প্রয়োজন সেখানে কোন প্রতিষ্ঠান বা এক্সপার্ট এর পরামর্শ নিন।

শর্টকাট এবং সস্তা খোঁজাঃ

জাতিগতভাবে আমরা সব সময় শর্টকাট ব্যবহার করতে ভালবাসি। অনলাইন বিজনেস করতে এসেও অনেককে দেখেছি একই রকম মানসিতকা নিয়ে কাজ করতে। হুট করে পেইজে লাখ লাখ লাইক লাগবে, আমার ভিডিও ভাইরাল হতে হবে, অন্যের কাস্টমার আমার পেইজে আনতে, দুই মাসের মধ্যেই লাখ টাকার সেল আনতে হবে ইত্যাদি।

এছাড়াও আমাদের মাঝে ব্যবসায়ের টাকা ঢালার পেছনে অনীহা কাজ করে। ভেজাল খেলে যেমন শরীরের ক্ষতি হয়, ভেজাল সার্ভিস নিলে আপনার ব্যবসায়ের ক্ষতি হয়। সার্ভিস নেয়ার ক্ষেত্রে সস্তা খুঁজতে খুঁজতে অনেকেই শিকার হয় প্রতারণার, ভেজাল সার্ভিস এবং অতঃপর পেইজ হারানো, রেস্ট্রিকশন হয়ে যাওয়া, বট লাইক দিয়ে পেইজ ভর্তি হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যায় পড়তে হয়।

প্রথম থেকেই শর্টকাট এবং সস্তা না খুঁজে যদি প্রপারভাবে আগাতেন তাহলে আসলেই এগিয়ে থাকতেন।

ধৈর্যয়ের অভাবঃ

অনলাইন বিজনেস সহজ না। এখানে বিপুল পরিমাণ প্রতিযোগিতা এবং দিন দিন এটা বাড়বে। এখানে রাতারাতি রেজাল্ট সব সময় আসবে না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তির “লাখ এবং কোটি টাকার ব্যবসা” এর দাবি পরখ করে দেখবেন। এসব দেখে অনেকের মধ্যে ধারণা চলে আসে যে অনলাইন বিজনেস থেকে দ্রুত টাকা উঠানো সম্ভব। তখন অল্প সময়ে অনেক কিছু লাগবে এই চিন্তায় মন আর ধৈর্যয় রাখতে পারে না।

সিদ্ধান্ত হীনতায় ভোগা, বার বার ডিসিশন চেঞ্জ করা, অস্থির থাকা, সার্ভিস প্রভাইডার দের সময় না দেয়া, তাড়াহুরো করা, দুই দিন পর পর অ্যাড টারগেটিং চেঞ্জ করা, বুস্ট থেকে সেল না আসলে বুস্ট কাজ করে না মনে করা ইত্যাদি করে অপরিপক্ক সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষতি করে নিজের ব্যবসায় এর।

জানি কথাগুলো শুনতে ভাল লাগে না কিন্তু এটাই সত্যি। গত ৫ বছর ধরে ৬০০+ প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করে, ১০+ ব্যাচের ট্রেইনিং করিয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতার আলকেই যা দেখেছি সেটা শেয়ার করলাম আপনাদের সাথে।

পুরো লেখাটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

নাফিস কাওসার – ফাউন্ডার – Continto